নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে একটি বিদ্যালয়ে দুই ছাত্রের ঝগড়াকে কেন্দ্র করে একপক্ষ আরেকপক্ষের ওপর হামলা চালিয়ে নারীসহ অন্তত ১৮ জনকে পিটিয়ে আহত করেছে। হামলাকারীরা উপজেলার চম্পকনগর গ্রামের দোকানপাটসহ অন্তত দেড়শ’ বাড়িঘরে ভাঙচুর ও লুটপাট চালায়।
শুক্রবার সকালে এই ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর ঘটনাস্থল ও এর আশপাশের গ্রামে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
পুলিশ জানায়, বুধবার উপজেলার তেুতুইতলার কবি নজরুল স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণির ছাত্র চম্পক নগরের শিহাব ও দশম শ্রেণির স্কুল ছাত্র কাকাইলমোড়ার রাজনের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে বাকবিতণ্ডার এক পর্যায়ে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে রাজন ও তার অনুসারীরা শিহাবকে পিটিয়ে আহত করে। বিষয়টির মিমাংসার জন্য শুক্রবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে চম্পকনগরের পক্ষে ৪নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি মোছলেম মেম্বার এবং কাইকাইল মোড়ার পক্ষে খাগকান্দা ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের মেম্বার লোকমান হোসেন ও আওয়ামী লীগ নেতা তোফাজ্জল হোসেন তার লোকজন নিয়ে বৈঠক বসেন। এ সময় উভয়পক্ষের লোকজনের মধ্যে উত্তেজনার এক পর্যায়ে মারামারি হলে কোন মিমাংসা ছাড়াই বৈঠক শেষ হয়। এ খবর লোকমান মেম্বারের গ্রামে পৌঁছালে কাকাইলমোড়া, বাহেরচরসহ আশপাশের কয়েকশ’ গ্রামবাসী সংঘবদ্ধ হয়ে দেশিয় ধারালো অস্ত্রসজ্জ নিয়ে চম্পকনগর গ্রামে হামলা চালায়। আতঙ্কে ওই গ্রামের নারী পুরুষ ঘর থেকে বেড়িয়ে নদী সাঁতরে পার হয়ে পাশের গ্রাম জাঙ্গালিয়ায় আশ্রয় নেয়। পরে হামলাকারী অন্তত দেড়শ’ বাড়িঘর ভাঙচুর করে ও লুটপাট চালায়। হামলায় আহত হয় নারীসহ অন্তত ১৮ জন। এদের মধ্যে মাকসুদা বেগম নামে একজনের হাত ভেঙে গেছে। তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। বাকিদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
খাগকান্দা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আরিফুল ইসলাম জানান, আড়াইহাজারের ইতিহাসে এমন বর্বরোচিত হামলার ঘটনা ঘটেনি। একটি গ্রামের রাস্তা পাশের ও বাজারের দোকানপাটসহ সবগুলো বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের চিত্র দেখে তিনিও হতবাক হয়েছেন।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন থানার ওসি আকতার হোসেন জানান, হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত চম্পকনগর গ্রাম পুলিশ পরিদর্শন করেছে। এখনও ওই এলাকায় পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এ ব্যপারে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।